আমার বই পড়ার গল্প . . .

ছবি : © মনিরুল আলম

যতদূর মনে পরে আমার বই পড়ার এই অভ্যাস মায়ের কাছ থেকে পাওয়া । ছোটবেলায় দেখতাম ‘মা’ নিয়মিত নামাজ পরার পাশাশাপি কোরআন শরিফ পাঠ করতেন । আমাদের বাসায় নিয়মিত পত্র-পত্রিকা রাখা হতো । বিশেষ করে দৈনিক পত্রিকা ‘ইত্তেফাক’ এবং মায়ের পছন্দের পত্রিকা ছিল—সচিত্র সাপ্তাহিক ‘বেগম পত্রিকা’ । আমি সে গুলোর পাতা উল্টাতাম, ভালো লাগতো । মায়ের ‘বেগম পত্রিকা’ পাঠটির অনুরাগের কথা এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে ।

বিভিন্ন সূত্র থেকে থেকে জানা যায় — ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ বিভক্ত হবার কিছুদিন আগে কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত হয় ‘বেগম পত্রিকা’। এই সাপ্তাহিক পত্রিকাটির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন, তৎকালীন ‘সওগাত’ পত্রিকার সম্পাদক নাসির উদ্দিন।

ভারতবর্ষ বিভক্ত হবার পরে ১৯৫০ সালে বেগম পত্রিকার অফিস ঢাকার পাটুয়াটুলিতে আসে । বর্তমানে এটাই তার স্থায়ী ঠিকানা।বেগম পত্রিকার প্রথম সম্পাদক ছিলেন, কবি সুফিয়া কামাল। তার সাথেই কাজ করতেন নাসির উদ্দিনের একমাত্র কন্যা নূরজাহান বেগম।

এই বেগম পত্রিকা তৎকালীন সমাজে নারী পাঠাভ্যাস গড়ে তোলা এবং তাদের জন্য সাংস্কৃতিক বিনোদন দেবার একটি বড় মাধ্যম হয়ে উঠেছিল। ১৯৬০ এবং ১৯৭০’র দশকে প্রতি সপ্তাহে বেগম পত্রিকার প্রচার সংখ্যা ছিল ২৫ হাজারের মতো। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ডাকযোগে এই পত্রিকা পৌঁছে যেত। যা আমার ‘মা’ —আয়েশা সিদ্দিকা পত্রিকাটির একজন নিয়মিত পাঠক এবং গ্রাহক হিসাবে উল্লেখ করা যেতে পারে ।

তো যা হোক — দৈনিক পত্রিকা, ম্যাগাজিন আর বিভিন্ন গল্পের বই, কবিতার বই যেমন — সেবা প্রকাশনি নানা বই, রোমেনা আফাজের দস্যু বনহুর সিরিজ এবং বেতালের কমিকস ছিল আমার নিয়মিত পাঠের অন্যতম বিষয় । প্রিয় বন্ধু চন্দন, কামাল, লিপ্টন, অপু এবং আমার সংগ্রহে ছিল প্রচুর কমিকস, যা আমরা একে অপরকে শেয়ার করতাম। আমরা বাংলাবাজার পুরাতন বইয়ের মার্কেট থেকে কম টাকায় এসব বই কিনতাম।

এ ছাড়া আমি প্রতিবছর ২১শের বইমেলা আসলে সেখানে আমার নিয়মিত যাতায়াত হতো। বন্ধুদের ষ্টলে বসা, আড্ডা মারা ছিল আমার প্রধান কাজ । বিভিন্ন কবি, লেখকদের সাথে পরিচিত হওয়া তাদের সম্পর্কে জানা, তাদের বই কেনা ছিল তখন আমার নিয়মিত চর্চা । ২১শে বই মেলায় নানা ঘটনা এখন শুধুই স্মৃতির পাতায় !

বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ শেষে পরবর্তী পেশাগত জীবনে প্রবেশের সাথে সাথে আজ পাঠভ্যাস হারিয়েছে। তবে প্রিয় দুই সন্তান মেঘ, ঢেউ’কে অনুপ্রেরনা দেওয়ার জন্য অনিয়মিত হলেও এই পাঠভ্যাস আবার শুরু করেছি । নিজের এই বই পড়ার অভ্যাসটা ফিরিয়ে আনা এবং ওদের ভিতরে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে চাই।

এবারের ২১শের বইমেলায় বেশ কিছু বই কেনা হয়েছে যা এবারের রমজান মাসে পাঠ শেষ করেছি । আমার কাছে মনে হয়েছে বই পড়ার সেই পুরোনো অভ্যাসটি আবার ফিরে আসতে শুরু করেছে । আর এখন অনলাইনে বই অর্ডার করলে বই চলে আসে বাসায় । প্রযুক্তির কল্যাণে বিক্রয় ব্যবস্খাপনা বদলে গেছে !

‘আমাদের কুরআনের বন্ধুরা’ বইটির রিভিউ :

মেঘ, ঢেউ এর জন্য কেনা ছোটদের উপযোগী করে লেখা—‘আমাদের কুরআনের বন্ধুরা’ বইটি আমার পড়ার পাশাপাশি মেঘ এর পাঠ শেষ করেছে এই রমজানে । আমাদের কোরআন শরিফে বিভিন্ন নবী ও রাসূল এর যে বর্ণনা করা হয়েছে তার একটি বাংলা ভাষায় রচিত ছোটদের উপযোগী করে গল্পের আকারে বইটি লেখা হয়েছে । যা এক কথায়—সুন্দর এবং পরিচ্ছন্ন । বইটি পাঠ করে আমার ভালো লেগেছে । যদিও কিছু কিছু কোরআনের কাহিনী অতি সংক্ষেপ করার পাশাপাশি কিছু কিছু ঘটনা খুব দ্রুততার সাথে বর্ণনা করা হয়েছে । মনে হয় শিশুদের কথা বিবেচনা করে এমনটা করা হয়েছে ।

তবে বইটির উল্লেখ যোগ্য দিক হলো— প্রতিটি কাহিনীতে কোরআনের সূরা এবং আয়াত নম্বর উল্লেখ করা হয়েছে এবং প্রতিটি কাহিনী শেষে ছোট ছোট প্রশ্ন করা হয়েছে, যার উত্তর প্রতিটি কাহিনীতে উল্লেখ আছে। যা পাঠ করলেই উত্তর দেয়া সম্ভব ।বইটির প্রচ্ছদ ভালো লেগেছে। আর্ট পেপারে ছাপা হওয়া বইটির মান অনেকাংশে ভালো । প্রতিটি কাহিনীতে লেখার পাশাপাশি প্রতিটি পৃষ্ঠায় জলরঙ দিয়ে আঁকা ছবি ব্যবহার করা হয়েছে, যা বইটির অলঙ্করণ নান্দনিক হয়েছে ।

ইফতার শেষ করে— চায়ের পানের পাশাপাশি একটু সময় নিয়ে বইটি শেষ করেছি । এবং এই বইটি নিয়মিত পাঠের অংশ হিসেবে আমার ব্যক্তিগত বইয়ের লাইব্রেরিতে স্থান দিয়েছি । ছোটদের কোরআন সম্পর্কে ধারণা পেতে একটা সুন্দর বই ।

বই : আমার কুরানের বন্ধুরা

লেখক: ইকবাল কবীর মোহন

প্রকাশনায় : নার্গিস মুনির, শিশুকানন

প্রচ্ছদ : আজিজুর রহমান

মূল্য : ২২০ টাকা

ডাইরি / ঢাকা, এপ্রিল ২০২৩
ছবি © মনিরুল আলম

মায়া-আলোয় শরৎ দেখা . . .

ছবি: মনিরুল আলম

নীলাকাশে তখন সবেমাত্র সূর্য্যস্তের রঙ লাগতে শুরু করেছে, আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখলাম, সাদা মেঘ গুলো কোথাও কোথাও সেই রঙের আভায় ঝলকাচ্ছে, আহা— কি যে সুন্দর দেখতে ! এটাকেই বলে প্রকৃতির—ক্যানভাস । চারিদিকে শান্ত নিরবতা, মৃদু বাতাস আর শুভ্রতা নিয়ে দাড়িয়ে থাকা কাশফুলেরা, আমাদের কাছে আজকের পৃথিবীটার গল্পটা যেন এমনই—ভালোবাসার, আমরা হাঁটতে শুরু করলাম।

প্রকৃতি— তার নিজের ভিতর এমন একটা আশ্চর্য ক্ষমতা ধারণ করে যে, মানুষের দল সেই মায়ায় নিজেকে জড়িয়ে ফেলে ! মানুষের মাথার ভিতরে এক ধরণের ‘বোধ’ তৈরি হয় ! চারিদিকের পরিবেশটা তখন এক আশ্চর্যময় ভালোলাগা তৈরি হয় । আবার এর বিপরীতও হয়— সেটা বোধহীন মানুষের বেলায় খাটে !

দিনের আলো ফুরিয়ে গেলে, একটু পরেই সন্ধ্যা নামবে, এখানে। আমরা তখন শরতের কাশফুল ঘেরা মাঠে হেঁটে চলছি, মৃদু ছন্দে । এখানে, সেইসব নীলাকাশে সাদা মেঘেরা খেলা করে, ঐ যে দূরে—দিগন্ত রেখা দেখা যায়; ঠিক তার নিচেই মাঠের প’রে মাঠে ছড়িয়ে আছে কাশফুলেরা—ওরা যেন সব শরৎ ছবি হয়ে আছে !

হাঁটতে হাঁটতে চারিদিকে কেমন যেন এক ধরণের শীতল অনুভূতি হতে লাগলো, বাতাসের গতিবেগ কিছু একটা ইঙ্গিত দিতে চাইছে, কাশফুল গুলোতে যেন সেটা বুঝতে পেরে কেমন যেন নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছে ! প্রকৃতির ‘খেয়াল’ বলে কথা ।

ওমা— এইসব যখন ভাবছি, তখন দেখি আকাশ তার ক্যানভাস একদম পাল্টে ফেলছে ! আকাশ জুড়ে তখন কালো মেঘের আনাগোনা—বৃষ্টি নামবে বলে মনে হয় ! মেঘ— তখন হঠাৎ করে চিৎকার করে বলে উঠলো, বাবা প্লেন ! দেখো কতো নিচ দিয়ে চলছে ! আমরা তখন সবাই তাকালাম, ঢেউ’ সেই প্লেন দেখে আনন্দে চিৎকার করে উঠলো ! আমি মেঘ’কে বললাম, ওটা নামছে একটু দূরেই আমাদের এয়ারপোর্ট, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর ।

বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল ততোক্ষণে ! আমরা তখন বৃষ্টি ভেজা থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করতে কোন একটা ছাউনি খুঁজতে লাগলাম, কিন্তু আশেপাশে সেরকম কিছু চোখে পরলো না, বেশ দূরে একটা নির্মাণাধীন ব্রীজ দেখলাম, সেটাকে টার্গট করে দ্রুত হাঁটতে লাগলাম ! তবে সেই ব্রীজ পর্যন্ত পৌঁছাতে যথেষ্ট ভিজে গেলাম, আমরা । মজার ব্যাপার হলো, ঢেউ এবং মেঘ এই বৃষ্টিতে ভিজতে পেরে ওরা তাদের আনন্দ প্রকাশ করতে লাগলো। ঢেউ—বলে উঠলো, বাবা এই বৃষ্টি আমার খুব ভালো লাগছে, আমি বললাম, বিউটিফুল মনের আনন্দে ভিজো— ‘মা’ । আজ ছোট এই মানুষটির কাশফুলের মাঠে বৃষ্টিভেজার অভিজ্ঞতা হচ্ছে !

মেঘ’কে দেখলাম কাশফুলের মাঝে তার দুই হাত প্রসারিত করে, সে বৃষ্টিটাকে খুব উপভোগ করছে । অন্যদিকে মেঘ/ঢেউ এর মা, মেঘের সেই দৃশ্য দেখে তার দিকে ‘কটমট’ করে তাকিয়ে বলছে, মেঘ দ্রুত হাঁটো ! বেচারী বেশ খানিকটা ভিজে গেছে, বৃষ্টিতে ! অবশেষে আমরা ব্রীজের নিচটায় আশ্রয় নিলাম, ততোক্ষণে ঝুম বৃষ্টি শুরু হয়েছে, এখানে ।

ব্রীজটির নিচে দাড়িয়ে আমরা বৃষ্টি পরা দেখতে লাগলাম, কাশশফুলের বনে তখন অবিরাম বৃষ্টি ঝরছে ! মেঘ, আমাকে বললো, বাবা আমরা’তো বৃষ্টিতে ভিজেই গেছি, চলো আরো একটু ভিজি। আমরা বাপ-বেটা মিলে আবার ভিজতে শুরু করলাম, আমাদের এই কান্ড দেখে ‘ঢেউ’ তার মায়ের কাছ থেকে চলে এসে, আমাদের সাথে যোগ দিলো !

একটু পরেই বৃষ্টি থেমে গেল । মেঘ/ঢেউ এর মা বললো, সে এখন বাসায় ফিরে যেতে চায় ! আমরা তার সাথে একমত হয়ে সিএনজিতে উঠে পরলাম । ততোক্ষণে কাশফুলের বনে সূর্যাস্ত হচ্ছে । আমাদের সিএনজি চলতে শুরু করলে, একটু পরেই দেখি—ঢেউ আমার কোলে ঘুমিয়ে পরেছে ! তখন তার চোখে-মুখে অদ্ভুত এক মায়া-আলো ছড়িয়ে পরেছে । আমরা তখন সেই মায়া-আলো সঙ্গী করে, ঘরে ফিরে চলছি ।

সেপ্টেম্বর , ২০২১

■ ডাইরি / দিয়াবাড়ী, উত্তরা

© মনিরুল আলম

© মনিরুল আলম

এখানেই প্রকৃতির শ্রেষ্ঠত্ব—মায়া !

ছবি: মনিরুল আলম

আমাদের দেশে ছয় ঋতুর ভিভাজন কাল হিসেব করলে এখন চলছে—শরৎকাল। অর্থাৎ ভাদ্র-আশ্বিন মাস মিলে শরৎকাল । নীলাকাশে সাদা মেঘেরা এই ঋতুতেই ভেসে বেড়ায় ! আবার হঠাৎ করেই আকাশে মেঘ জমে, ঝিরিঝির বৃষ্টি সব কিছু ভিজিয়ে দেয় ক্ষণিক সময়ের জন্য । দেখতে খুব অসাধারন লাগে । এটাই এই ঋতুর বৈশিষ্ট ।

সকালে ঘুম থেকে উঠেছি । বারান্দাতে দাঁড়াতেই দেখি গুড়িগুড়ি বৃষ্টি পরছে ! মানুষজন কেউ কেউ ছাতা মাথায় নিজ নিজ গন্তব্যে ছুটছেন ! যদিও বেশীর ভাগ মানুষ এই গুড়িগুড়ি বৃষ্টিকে পাত্তা দেন না ! বারান্দায় লাগানো ফুলগাছ গুলোর দিকে তাকাতেই দেখলাম সবগুলো গাছ বৃষ্টিতে ভিজে একাকার ! আমাদের সামনের বাসার টিনের চালা দেওয়া বারান্দা থেকে বৃষ্টির পানি গড়িয়ে গড়িয়ে রাস্তার উপর পরছে ! মেঘ-ঢেউ’কে ডাকলাম তারা তখনো ঘুম !

নয়নতারা গাছটিতে বেশ কয়েকটা সাদা রঙের ফুল ফুটে আছে । ফুল এবং পাতাতে বৃষ্টির ফোটা লেগে থাকা এবং তাতে সূর্যের আলো পরায়— বৃষ্টির ফোটা গুলো খুব অসাধারন লাগছে ! যদিও দৃশ্যটি খুব সাধারন খুব সহজেই যা আমাদের চোখ এড়িয়ে যায় । কিন্তু একটু খেয়াল করে দেখলেই মনের ভিতরে এক অসাধারন অনুভূতি তৈরি হয়— ভালো লাগে । আমার কাছে মনে হয়, এখানেই প্রকৃতির শ্রেষ্ঠত্ব—মায়া ! যদিও আমাদের বেশীর ভাগ মানুষদের এই সব ছোট ছোট অনুভূতি দিন দিন ভোতা হতে চলছে ! পাশাপাশি করোনাকালীন এই দুঃসময়ে আমরা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছি, প্রযুক্তি নির্ভরতায় অভ্যস্ত হয়ে পরছে আমাদের জীবন . . .

ডাইরি / ঢাকা, বুড়িগঙ্গা নদী
শরৎকাল, আশ্বিন ১৪২৮
লেখা ও ছবি: মনিরুল আলম

জন্ম সনদের যোগ . . .

ছবি: মনিরুল আলম

জ্যোতিষ শাস্ত্রে মানুষের যে ভুগোল লেখা থাকে, তা আমার কখনো দেখা হয়ে উঠেনি; দেখা হয়ে উঠেনি আকাশমন্ডলের সেই সব— জ্যোর্তিময় গ্রহ, নক্ষত্রদের ! অথচ কোন এক শুক্লা তিথিতে জন্ম নেওয়া গাছটির সাথে, আমার জন্ম সনদের যোগ খুঁজে পাওয়া গেছে—সেই কবে থেকে . . .

পুরান ঢাকা / বাংলাদেশ

অন্তহীন এক ঘুম . . .

বিকেলের রোদে হেঁটে যায় পথিক,—

হিজলের ছায়াতল; বুনো ঝোঁপ;

মরা খাল; সাঁকো পেরিয়ে—

নি:সঙ্গ—সেই কবরস্থান; অন্ধ পেঁচাটি

বসে আছে— নি:শব্দে;

পিতা—পিতামহ আর স্বজনেরা

দিয়েছে অন্তহীন এক ঘুম—এইখানে;

তবু এই আমি,—

অযুত প্রার্থনায় দাড়িয়ে থাকি

এক প্রসন্ন সন্ধ্যায় ।

মানিকগঞ্জ, হিজুলিয়া / ডিসেম্বর ২০১৯

একটি বুক হাঁটা সরীসৃপ . . . 

সে দিন—আরমানিটোলার মাঠ পেড়িয়ে, 
একটা নব নিমর্িত ভবনে প্রবেশ করেছিলাম;

আলো-ছায়ার কারবারী—এই আমি;

একটা বেড়ালের সাথে দেখা হলো; 

তিন জন শ্রমিক তাদের স্বপ্নের কথা বলে গেলেন;

অথচ,সিড়িঁ দিয়ে নিচে নামতে নামতে অন্ধকার

আমাকে—সেই অতীতে নিয়ে গেল;
একটি বুক হাঁটা সরীসৃপ শব্দহীন অন্ধকার গহোবর 

থেকে বেড়িয়েছিল—তার চোখে ছিল বিভ্রান্তি ! 

পরিত্যক্ত পুরোনো ভবনটি ছিল তার আশ্রয়স্থল; 

এখন সে নেই—পুরোনো ভবনটি ভেঙ্গে ফেলা হয়েছিল !
সে দিন—আরমানিটোলার মাঠ পেড়িয়ে, 

একটা নব নিমর্িত ভবনে প্রবেশ করেছিলাম—এই আমি । 

-মনিরুল আলম 

আরমানিটোলা, পুরান ঢাকা

০৭, এপি্রল, ২০১৬

কোন অন্তর্লোকে যাই . . . 

পৃথিবী ক্রমেই নিষ্ঠুর থেকে নিষ্ঠুরতম হচ্ছে—

আমি কোন অন্তর্লোকে যাই, কোন নিভৃতে;

সে দিন রাতের অন্ধকারে বৃষ্টি ঝরা দেখছিলাম—

ফুটপাতটি ছিল আমার আশ্রয় স্থল— নিরাপদ !

আমি আর এক মূল্যহীন অন্ধকার !
দুজন পথচারী—সংসারের কথা বলে গেল,

বলে গেল জীবন সংগ্রামের কথা—অত:পর; 

বৃষ্টি থামলো । 

-মনিরুল আলম 

নথর্ সাউথ রোড, পুরান ঢাকা

০৩ এপি্রল, ২০১৬

এ শহর দোয়েলের . . . 

এই শহরে এখনো—দোয়েলেরা, শালিকেরা ঘুড়ে বেড়ায়; সেদিন পৌষ-সকালে  দেখা হলো—সবুজ পাতাটির নিচে—লাল বট ফলের আশায় তারা ঘুড়িতেছে, ঘুড়িতেছে—অতপর—অন্ধকার সন্ধ্যা; নিয়ন আলো; বাদুড়ের দল ঝাঁকে ঝাঁকে উড়িতেছে—সেই সব লাল লাল বট ফলের আশায় ! 

এই শহরে এখনো—দোয়েলেরা, শালিকেরা বাস করে—সেই দিন; পৌষ সন্ধ্যায় !
মনিরুল আলম / রমনা উদ্যান, ঢাকা
৩০, ডিসেম্বর, ২০১৫ 

Eid al-Adha Festival . . . 

 

© Monirul Alam
 
Muslims attend Eid al-Adha prayers at the National mosque in Dhaka, Bangladesh, 25 September 2015. Muslims worldwide observe the Eid al Adha festival or Feast of the Sacrifice, when they are slaughter cattle, goats and sheep in commemoration of the Prophet Abraham’s readiness to sacrifice his son to show obedience to God.