সন্ধ্যা পৃথিবীর গল্প . . .

আজো পৃথিবীর পুরোনো পথেই সন্ধ্যা নামে;
সন্ধ্যা আলোরা ফিরে যেতে যেতে
—ওরা একবার মিলিত হয়েছিল
মায়া ছবি হবে বলে !

ডাইরি / পুরান ঢাকা, জুলাই ২০২২
© মনিরুল আলম

ছবি: মনিরুল আলম । পুরান ঢাকা ।

ঝিরিঝিরি বৃষ্টি থেকে ওদের জন্ম . . . 

© Monirul Alam
বাংলাদেশ বার কাউন্সিল থেকে কাজ শেষ করে বেরিয়েছি । পাশেই হাইকোর্ট প্রাঙ্গনে ফুটে আছে সবুজ বুনো ঘাস ! সেই সব ঘাস গুলোর উপর জমে আছে ছোট ছোট জলকণা । সূর্যের আলোয় তারা ঝলমল করছে, ওরা দূর্বল হয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় কায়ান্টের অংশ । ঝিরিঝিরি বৃষ্টি থেকে ওদের জন্ম ! 

আর ঘূর্ণিঝড় ‘কায়ান্ট’ সম্পর্কে যতোটুকু জানা গেল, এই নামটি এসেছে মিয়ানমার থেকে। স্থানীয় ভাষায় যার অর্থ কুমির ! নগরবাসী এই কায়ান্টের প্রভাবে সৃষ্ট ঝিরিঝির বৃষ্টি মাথায় নিয়ে ঘরে ফিরতে হবে আরো দুই দিন . . . 

পুরান ঢাকা, কার্তিক ১৪২৩

২৭ অক্টোবর ২০১৬

© Monirul Alam
#MonirulAlam #Dhaka #Bangladesh #kyant #CyclonicStorm #rain #iPhone

ক্যামেরা কাঁধে আবার ছুটবেন তিনি . . . 

© Monirul Alam

অনেক দিন পর আবীর ভাইয়ের সাথে দেখা হলো আজ ! ল্যাবএইড হাসপাতালে এসেছেন চেক আপ করাতে । তার হাতের অবস্থা আগের থেকে অনেকটা ভালো । আনন্দের সংবাদ হলো— এই সপ্তাহ থেকে আবার কাজ শুরু করছেন । আমরা, এই মানুষটিকে নানা আ্যসাইমেন্টে আবার দেখতে পাবো—ক্যামেরা কাঁধে ছুটে চলছেন । 

সবাই আবীর ভাইয়ের জন্য দোয়া করবেন . . . 

ল্যাবএইড হাসপাতাল

ধানমন্ডি, ঢাকা

অক্টোবর ২০১৬

সত্য এবং সুন্দরের গল্প . . . 

© Monirul Alam
সুদিন— সেদিন বাহাদুর শাহ পার্কের সামনে দাঁড়িয়ে আমাকে একটা প্রশ্ন করেছিল —সত্য এবং সুন্দর কি ? আমি তার সেই উত্তর দিতে পারিনি । 

সকালে ঘুম থেকে উঠে কুঞ্জলতা আর মেহেদী গাছের ছবি তোলা শেষ করে ঘরে ফিরে যাচ্ছি—হঠাৎ করেই শুভ্রতা’কে চোখে পড়ল ! দেয়ালের ওপাশটায় দিব্যি বসে আছে—মাঝে মাঝে আমার দিকে ফিরে ফিরে তাকাচ্ছে । আসলে— আগের দিন রাতে, বিথোভেনের সুর আমাকে একটা সত্য এবং সুন্দরের মধ্যে আটকে রেখেছিল—দীর্ঘক্ষণ ! 

আজ সকালে, এখানে বৃষ্টি হয়নি—তাইতো ফুটে থাকা অলকানন্দা আর কাঠবেলিরা গল্প জুড়ে দিয়েছিল । আমি জানি না এদেরকে সত্য এবং সুন্দর বলে কিনা . . . 

পুরান ঢাকা, পাতলা খান লেন

সেপ্টেম্বর ২০১৬

সত্য এবং সুন্দরের গল্প . . . 

© Monirul Alam
আমি বাংলার আলপথ দিয়ে, হাজার বছর চলি।

চলি পলিমাটি কোমলে আমার চলার চিহ্ন ফেলে।

তেরশত নদী শুধায় আমাকে, কোথা থেকে তুমি এলে . . . 

[ সৈয়দ শামসুল হক ] ২৭ ডিসেম্বর ১৯৩৫ – ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬

প্রয়াত কবি—সৈয়দ শামসুল হকের সাথে সেই অর্থে, আমার কোন স্মৃতি নেই ! নেই কোন দৃশ্যপট । স্মৃতির অতলে খুঁজে ফিরি সেই সব দৃশ্যপট । সেখানে দেখা দেন আর এক প্রয়াত কবি—শামসুর রাহমান ! মনে পরে তার শ্যামলী রোডের দোতলা বাসায় একবার ছবি তুলতে গিয়েছিলাম—আমরা । কবি এবং কবি পরিবারের চমৎকার সমাদরে আনন্দিত হয়েছিলাম সে দিন ! 

কবির একটা কথা আজও আমার খুব মনে পরে । কবির সাথে আমার প্রথম স্বাক্ষাতে তিনি বলেছিলেন— এই যে, আপনাকে আমি চিনি । আপনার মুখটা আমার অনেক দিনের পরিচিত । আমি তার সেই কথায় পুলকিত হয়েছিলাম, ছোট হাসি হেসেছিলাম । আর মনে মনে, ভাবছিলাম এতো বড় একজন কবি আমাকে কি ভাবে চেনেন ! আর আমাকে কিভাবেই বা মনে রাখলেন ! 

সময়টা ছিল ২০০১ সাল— তখন আমি পাঠশালায় কাজ করি, ফটোগ্রাফী করি । সেই সময়ে প্রথম আলো পত্রিকায় আমার একটা লেখা ছাপা হয়েছিল চিঠিপত্র বিভাগে। লেখাটির শিরোনামটি ছিল ‘রক্তাক্ত আমার পহেলা বৈশাখ’ । পহেলা বৈশাখের দিন রমনা বটমূলে ছায়ানটের ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠানে বোমা হামলায় দশজন নিহত হয়েছিলেন । সেই বিষয় নিয়ে আমার একটা অনুভূতির কথা লিখেছিলাম। ছাপা হয়েছিল ছবি সহ, পত্রিকাটিতে । 

আমার যতো দূর মনে পরে তার দুই/এক দিন পরে বাসায় বসে টিভি দেখছিলাম— এ চ্যানেল ও চ্যানেল দেখতে দেখতে হঠাৎ দেখি চ্যানেল আইতে কবি সৈয়দ শামসুল হক আমার লেখা, ছাপা হওয়া সেই চিঠিটি পড়ছেন ! সেই অনুষ্ঠানটি দেখে সেদিন আমার একটা অন্য রকম অনুভূতি হয়েছিল— মনে ! এরকম একজন কবির কন্ঠে আমার পুরো চিঠিটি আবৃত্তি শুনে যারপরনাই খুশি হয়েছিলাম । 

তারপর এই মানুষটির সাথে আমার পেশাগত কারনেই দেখা হয়েছে বার কয়েক নানা অনুষ্ঠানে । দূর থেকে মানুষটাকে দেখেছি, তার সম্পর্কে জেনেছি, তার ছবি তুলেছি । যতোদূর মনে পরে তার কয়েকটা পোট্রেট তুলেছিলাম, হয়তো এখন তা হারিয়ে ফেলেছি ! 

সেদিন তার বিদায় অনুষ্ঠানে ছিলাম বাংলা একাডেমিতে, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে । শত মানুষের শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা ফুলে সিক্ত হলেন কবি ! তারপর— চিরদিনের মতো যাত্রা শুরু করলেন, আমাদের কবি । যেখান থেকে আর কখনো কোন মানুষ ফিরে আসে না ! এই বাংলার অন্যতম সেরা ভাষাশিল্পী, সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক— আপনাকে অভিবাদন ! 

পুরান ঢাকা, পাতলা খান লেন

সেপ্টেম্বর ২০১৬

সত্য এবং সুন্দরের গল্প . . . 

© Monirul Alam
সে দিন—বৃষ্টি না হওয়ার গল্প বলেছিলাম । আজ কিন্তু সকাল থেকে, এখানে বার কয়েক বৃষ্টি হলো । আকাশ কালো করে মেঘ ডেকে ডেকে—বেশ ঝম-ঝমিয়ে নামলো ওরা ! যদিও তাদের আধিপত্যের স্থায়িত্ব বেশীক্ষণ ছিল না ! তবে, তারা জানান দিয়ে গেল—আবার আসবেন ! 

আমি তখন জীবনানন্দ দাশের ‘ঝরা পালক’ নিয়ে সবে বসেছি, আমার জানালার পাশে—সঙ্গে এক মগ চা । নাহ ! তাদের ঐ রকম ডাকাডাকিতে আর ঘরে বসে— থাকা গেল না ! মন বারবার তাড়া দিচ্ছিল, একবার না হয় দেখে আসি অলকানন্দা, কুঞ্জলতা আর কাঠবেলিরা—কি করছে ! এই বৃষ্টিতে ! 

মনে মনে যা ভেবেছিলাম, তাই হলো । দাপটে বাতাসের জোড়ে ! নিজেকে স্বাধীন ভেবে ! গাছের সাথে সকল সম্পর্ক ছিন্ন করে ; বৃষ্টি-জলে দিব্বি সাঁতার কাটছে ! হায় —অলকানন্দা ! 

আর এদিকে—কুঞ্জলতার দল, বৃষ্টি-জলে ভিজে ভিজে তার সোনালী ডানা মেলে ধরেছে। আকাশে উড়বে বলে ! আমি যখন এসব দেখছি, হঠাৎ করেই চোখে পড়ল দলটিকে ! তারা আমার প্রতিবেশী । বৃষ্টি থেমে যাবার পর; জমে থাকা বৃষ্টি-জলে নাইতে নেমেছে দলটি ! আমি এদেরকে—ধুসর কষ্ট বলে ডাকি . . . 

পুরান ঢাকা, পাতলা খান লেন

সেপ্টেম্বর ২০১৬