মেঘ—তুই তোর একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি লেখালেখিটা চালিয়ে যাস । নিশ্চয়ই তুই ভালো করবি, এটা আমার বিশ্বাস । প্রজ্ঞা হল জ্ঞানের সঠিক ব্যবহার ।
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম গুলোতে তোর অনিয়মিত লেখালেখিটা প্রমাণ করে তুই লেগে থাকলে ভালো করবি।দুনিয়াটা জয় করতে চাইলে নিজেকে জানা এবং দুনিয়াটাকে জানা জরুরী।এটা আমার কথা না জ্ঞানী সক্রেটিসের কথা । আমি শুধু একটু উল্টা-পাল্টা করে বললাম ।
তোর এ কাজে নিয়মিত চর্চা,অধ্যবসায় এবং সঠিক দিকনির্দেশনা করাটা জরুরী । যা তোর “মা” তোকে দিয়ে যাচ্ছে । অবশ্যই সে তোর জন্য একজন ভালো গাইড । মা— কে কখনো হারিয়ে ফেলবি না !
পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে সহজ কাজটা হলো মানুষকে সহজে উপদেশ এবং জ্ঞান দেওয়া । যা আমি তোকে সহজে দিলাম !
তোর জন্য শুভকামনা।
ভালোবাসা / বাবা ডাইরি / ঢাকা, মার্চ ২০২৩ মনিরুল আলম
বাবা—আমার ঘুম পাচ্ছে ! তখন রাত হয়ে গেছে, আমি মেঘ’কে নিয়ে মটরসাইকেল চালিয়ে বাসায় ফিরছি । আমি বললাম, বাবা—আমরা চলে এসেছি, আর একটু পরেই বাসায় ঢুকবো । মেঘ বলে—বাবা, জানো আমার কেন ঘুম পাচ্ছে ? আমি বললাম, না—সে বলে আমিতো আজ দুপুরে ঘুমাই নাই—তাই ঘুম পাচ্ছে !
আজ মেঘ আর আমি মটরসাইকেল নিয়ে বেড়িয়ে ছিলাম । সে বলে তোমার মটর সাইকেলে অনেকদিন আমি ঘুরতে বের হই না ! গিয়েছিলাম বেগম রোকেয়া এভিনিউ সড়কের বিসিএস কম্পিউটার সিটিতে । ক্যাননের মামুন ভাইয়ের সাথে একটা কাজ ছিল । মটর সাইকেলে যেতে যেতে বাপ-বেটা মিলে নানা কথা বলছিলাম ।
সাপ্তাহিক দিনটি বৃহস্পতিবার থাকায় সড়কে যানজটের অবস্থা ছিল যথারিত— ভয়াবহ ! কম্পিউটার সিটিতে কাজ শেষ করে বেড়িয়ে পড়লাম । আমাদের এখন গন্তব্য শিল্পকলা একাডেমী— প্রথম আলোর তরুণ আলোকচিত্রীদের শরনাগত—বাস্তচ্যুত রোহিঙ্গা শীর্ষক আলোচিত্র প্রদর্শনী দেখা । প্রদর্শনীতে গিয়ে দেখা হলো সুমন ইউসুফ, আশরাফুল আলম আর আবদুস সালামের সাথে । প্রদর্শনী নিয়ে কথা হলো ওদের সাথে ।
প্রদর্শনীটি কিউরেট করেছেন—ফটোসাংবাদিক আবীর আবদুল্লাহ । প্রদর্শনীর ছবি গুলো দেখে আমার কাছে মনে হয়েছে—দৈনিক সংবাদপত্রের জন্য এটা—এক ধরনের ডকুমেন্টেশন বা প্রামানিক দলিল । যদিও এই তরুণ ফটোসাংবাদিকদের কাছ থেকে আরও শক্তিশালী কাজ আশা করছিলাম ।
ফটোসাংবাদিকদের সব সময় একটা চাপের মধ্যে থেকে কাজ করতে হয় । সময় মতো ঘটনাস্থলে পৌছান, সঠিক অবস্থান নেওয়া, সঠিক ছবিটি তুলতে পারার পাশাপাশি তা সময় মতো অফিসে পাঠানো, পুরো প্রক্রিয়াটি একটা বড় মুন্সিয়ানার পরিচয় বহন করে— যা কাজ করতে করতে নিজের মধ্যে গড়ে উঠে ।
সময় উপযোগী প্রদর্শনীটির জন্য আয়োজক প্রথম আলো পত্রিকা, প্রদর্শনীর কিউরেট আবীর আবদুল্লাহ এবং সকল ফটোসাংবাদিকদের আমার পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাই . . .
যদিও টুরিষ্টদের জন্য বর্ষাকাল–সুন্দরবনে বেড়ানো জন্য উপযুক্ত সময় নয় । কারণ–কালবৈশাখী ঝড়, নিম্নচাপ, জলোচ্ছাস সহ নানা কারণে বনের পরিবেশ এবং জীবন হয়ে উঠে অন্যরকম ! বনে বেড়ানো তখন ঝুকিপূর্ণ হয়ে যায় ! তবে যারা বন’কে ভালোবাসে–প্রকৃতি প্রেমী; তাদের কথা আলাদা ! কবি গুরু– রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর বর্ষার রুপ দেখতে তার ছোট বোটে নিয়ে– উত্তাল পদ্মা ঘুরে বেড়িয়েছেন; দেখেছেন পদ্মা পারের সেই সব জীবন-গাঁথার গল্প . . .
বিশ্ব বাবা দিবস—সকল বাবা কে অভিনন্দন জানাই । কর্মব্যস্ত বাবা— নিজের সন্তানের জন্য সময় বের করুন । নিজের ছেলে-মেয়ে’র সাথে সময় করে খেলাধুলা করুন, শুধু মাত্র সাংসারিক দায়িত্ব বোধ টুকুর মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে—আপনার সন্তান’কে আরো ভালোবাসা দিন, সময় দিন।
জাতিসংঘের শিশু তহবিলের ইউনিসেফ সাম্প্রতিক জরিপটি জানাচ্ছে—বিশ্বে অর্ধেকের বেশি শিশু তাদের বাবার সঙ্গে লেখাধুলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত থাকে ! ৭৪টি দেশে এই জরিপ চালানো হয় । বিশ্বের প্রায় ৮০টি দেশে এই বাবা দিবসটি পালন করা হয়ে থাকে এখন ।
আমার বাবা আজ বেঁচে নেই । তিন সন্তানের জনক এই মহান মানুষটিকে ছোট বেলায় অনেক ভয় পেতাম । ভয়ে কাছে যেতাম না ! কিন্তু এটা ছিল—আমার ভুল ! বোঝা-পরার সময়টা পার করতে না করতেই, বাব চলে গেলেন —না ফেরার দেশে ! জমে থাকা কথা গুলো, বাবাকে— আর বলা হলো না !
আমার বাবা হারিয়ে, আরো এক বাবা পেয়েছি আমি —ছোট বাবা; আমার সন্তান । সেই ছোট বাবা ‘মেঘ’ কে নিয়ে আমার সময় কাটে—আদর-ভালোবাসা, মান-অভিমান বাপ-বেটা মিলে উপভোগ করি । বাবা মানুষটি যে ভয়ের না, বাবা যে জীবনের অনেক বড় বন্ধু —সেটা মেঘ ইতি মধ্যে জেনে গেছে । সে বাপ-সন্তানের এই সম্পর্ক—মন থেকে অনুভব করে !
বিশ্ব বাবা দিবসে মা-বেটা মিলে আমার জন্য— খুব সুন্দর একটা গিফট তৈরি করেছে ! সেই গল্পটা না হয়, অন্য কোন দিন করা যাবে । পিতা-সন্তানের ভালোবাসা অটুট থাকুক— আজীবন ।
খালপাড়ে পড়ে আছে কয়েক ফুট উঁচু নোংরা পলিথিনের স্তূপ—সেখানে মাছি উড়ছে! দুর্গন্ধ, কাছে যাওয়া যায় না! রয়েছে ঘোড়ার আস্তাবল। সরু খাল দিয়ে বয়ে যাওয়া—দগদগে কালা পানি! সেই কালা পানিতে ধোয়া হচ্ছে লন্ড্রির কাপড়! এটা বুড়িগঙ্গা নদীর শাখা খাল, কামরাঙ্গীরচরের প্রবেশ মুখের চিত্র।
একটা সময় এই খালটি বুড়ীগঙ্গা নদীর একটা চ্যানেল ছিল, এখন দখল হতে হতে তা সরু খালে পরিণত হয়েছে! এই খাল পার এলাকায় দেখা হলো কয়েকজন মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে—বিকেলে তারা এখানেই ঘোরাফেরা করে, মানে খেলাধুলা। এই শিশুদের সঙ্গে আমার পরিচয় হলো, টুকটাক কথা হলো ওদের সঙ্গে—ওরা ছবি তুলতে চাইলে আমি ওদের ছবি তুললাম। চোখে পড়ল টিন দিয়ে ঘেরা কিছু ছোট ছোট ঘর। কিছু নারী শ্রমিককে দেখলাম—নোংরা পলিথিনের স্তূপের ওপর বসে কাজ করছেন। আমার সঙ্গে ক্যামেরা থাকায় তাঁরা কেউ কেউ মুখ ঢেকে ফেললেন। এঁরা সামান্য অর্থের বিনিময়ে সারা দিন পলিথিন ঘাঁটাঘাঁটি করেন। তাঁদের থেকে একটু সামনের দিকে এগিয়ে গেলাম—চোখে পড়ল ব্রিজ! ব্রিজের নিচে বিকেলের রোদে বসে আছে একটি শিশু! মাটির নিজ দিয়ে বেরিয়ে আসা একটি ড্রেনের মুখ দিয়ে নোংরা পানি পড়ছে সরু খালটিতে—শিশুটি বসে বসে সেই পানি পড়া দেখছে! আরো চোখে পড়ল কিছু বেওয়ারিশ কুকুর! এরা সবাই এই বিষাক্ত পরিবেশে বেড়ে উঠছে—ভাবলেশহীন সব প্রাণ! আমি বিকেলের আলোয় একের পর এক ছবি তুলে যাই! সব চোখ যেন আমার ক্যামেরাকে কেন্দ্র করে ঘুরতে থাকে! কারো কারো চোখে আনন্দের ঝিলিক দেখি! কেউ কেউ ভীত-সন্ত্রস্ত! সেদিন পরিবেশ বিপর্যয় নিয়ে ছবি তুলতে গিয়েছিলাম—পুরান ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত কামরাঙ্গীরচর ও এর আশপাশের এলাকায়
এই এলাকা বুড়িগঙ্গার দ্বিতীয় চ্যানেল হিসেবে পরিচিত। দীর্ঘদিন ধরে দখল প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, এলাকাটি ঘুরলেই তা চোখে পড়ে। আর এই দখল প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত সরকারি মদদপুষ্ট লোকজন, সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না! সময় সময় রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হয়, একদল চলে নতুনরা ক্ষমতায় বসেন, তখন দখল প্রক্রিয়ার চিত্রেরও বদল ঘটে!
মূল নদী থেকে শুরু করে নদীটির আশপাশের খাল, খানা-খন্দে পানির প্রবাহ দেখলেই বোঝা যায়, বিশেষ করে শুকনো মৌসুমে নদীর পানিতে কালো এক ধরনের তরল পদার্থ ভাসতে থাকে, পুরো শুকনো মৌসুম। মাদ্রাসার শিশুদের সঙ্গে নদীর পানি নিয়ে কথা বলতেই—ওরা জানাল এ সময়ে (শুকনো মৌসুমে) তারা এই নদীর পানি ব্যবহার করে না। ওরা জানাল—এই পানিতে গোসল করলে শরীর পচে যায়, ঘাসহ নানা ধরনের অসুখ হয়। এ সময় এলাকার কেউ নদীর পানি ব্যবহার করেন না। বর্ষা মৌসুমে নদীর পানি যখন কিছুটা ভালো থাকে—তখন তারা এই নদীর পানিতে গোসল করাসহ অন্যান্য কাজে তা ব্যবহার করে।
মিরপুর-গাবতলী এলাকা থেকে শুরু হয়ে রায়েরবাজার বধ্যভূমি, হাজারীবাগ, লালবাগ ও কামরাঙ্গীরচর—এদিকে বাবুবাজার ব্রিজের নিচ হয়ে লালকুঠি, শ্যামবাজার, পোস্তগোলা, পাগলা পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকা দখল আর নদী দূষণের চিত্র প্রায়—অভিন্ন। আমি বুড়িগঙ্গা নদী ঘেঁষে নিমির্ত বেড়িবাঁধটির কল্পনায় আনি—না কোথাও খুঁজে পাই না এতটুকু দূষণমুক্ত পরিবেশ। যেখানে ভোরে বা বিকেলে রোদে নদীটির বাঁধ ধরে হেঁটে যাওয়া যায় বহু দূরে—কিংবা নৌকা নিয়ে নদী ভ্রমণে বেরিয়ে পড়া যায়—এই নদী বুড়িগঙ্গার বুকে! একটা সময় (নব্বই দশকে) আমাদের স্কুলজীবনে এই নদীতে বন্ধুরা মিলে নৌকাতে ঘুরে বেড়িয়েছি, শ্যামবাজার থেকে এক কাদি/ছড়ি কলা কিনে নৌকায় বসে তা খেতে খেতে গল্প করেছি, নদীর দুই পারের নানা চিত্র দেখেছি, জাল দিয়ে মাছ ধরা দেখেছি! আজ সেই সব চিত্র কোথায় হারিয়ে গেছে! অতীত কল্পনা থেকে বাস্তবে ফিরে আসি!
পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা সংবাদমাধ্যমে নানা সময়ে জানিয়েছেন এই নদী নিয়ে তাঁদের শঙ্কা ও পর্যবেক্ষণের কথা। প্রায় ৬২ ধরনের রাসায়নিক বর্জ্যে অনেক আগেই বিষাক্ত হয়ে গেছে বুড়িগঙ্গার পানি। বাতাসে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। নদীর তলদেশে জমাট বেঁধেছে আট ফুট পুরু পলিথিনের স্তর। পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ও প্রাণিবিজ্ঞানীদের মতে, মাছ ও জলজ প্রাণী বসবাসের জন্য প্রতি লিটার পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ পাঁচ মিলিগ্রাম বা তার বেশি থাকা প্রয়োজন। অন্যদিকে, দ্রবীভূত হাইড্রোজেন মাত্রা কমপক্ষে সাত মিলিগ্রাম থাকা উচিত। অথচ বুড়িগঙ্গা নদীর পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ প্রায় শূন্যের কোটায়।
এত দূষণ এবং দখলের মধ্যেও জীবন এখানে থেমে নেই! প্রতিদিন ঘরছাড়া, গ্রামছাড়া অসহায় মানুষের দল আশ্রয় নেয় এই নগরে। তাদের বসবাসের আশ্রয়স্থল হয় কখনো এই এলাকার কোনো বস্তিতে, এখানে-সেখানে বা অন্য কোথাও! বিপন্ন পরিবেশ, তবুও আশ্রয়হীন মানুষের আশ্রয় এখানেই—বেঁচে থাকতে হবে! ন্যায়-অন্যায় এখানে বিবেচ্য নয়—কখনই! নানা অপরাধ এখানে সংগঠিত হয়। পরিবেশগত কারণেই তা ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যায়। বড় কোনো অপরাধ সংগঠিত হলে প্রশাসনের টনক নড়ে, আবার রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়া এবং অসৎ প্রসাশনিক লোকজনের বদৌলতে অপরাধীরা ছাড়া পেয়ে যান।
দখল হয়ে যাওয়া নদীর পারে গড়ে উঠেছে পলিথিন ও প্লাস্টিক গলানোর কারখানা। ফেলে দেওয়া পলিথিন আর প্লাস্টিক এসব কারখানায় জড়ো করা হয়—তারপর তা আগুনে পোড়ানো হয়। দিনে-রাতে সারাক্ষণ এই এলাকায় ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখা যায়! এসব গলানো প্লাস্টিক আবার ব্যবহার করে তৈরি করা হয় নতুন প্লাস্টিকের পণ্য। দীর্ঘদিন ধরেই এসব কারখানা থেকে দূষিত বর্জ্য উন্মুক্ত স্থানে ফেলার কারণে পুরো এলাকা দূষিত হচ্ছে, দূষিত হচ্ছে বাতাস, বাড়ছে শ্বাসকষ্টের রোগ। যাঁরা এলাকায় বসবাস করেন, তাঁরা অনেকটা অসহায় হয়ে বেঁচে আছেন। এলাকাটি ঘুরে চোখে পড়ল পরিবেশ বিপর্যয়ের নানা চিত্র! দখলদার আর ক্ষমতাসীনদের নেতৃত্বে চলছে—এই পরিবেশ বিপর্যয়ের ঘটনা! পরিবেশ অধিদপ্তরসহ অন্যান্য কর্তৃপক্ষ, যাঁরা এসব দেখার দায়িত্বে আছেন—তাঁরা সত্যি কি তা দেখছেন? শুনেছি—নদী রক্ষায় সরকারের একটি টাস্কফোর্স আছে, সময়ে সময়ে তাঁরা জানান দেন, তাঁরা আছেন—শুধু টেবিলে আর খাতা-কলমে! তাঁদের মাঠে যাওয়ার মতো সময় হয় না।
আশার কথা শোনা যাচ্ছে, এ সরকারের সময়ে সম্প্রতি পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বুড়িগঙ্গা নদীর পানিপ্রবাহ বৃদ্ধির মাধ্যমে পানি দূষণমুক্ত করার লক্ষ্যে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীন ‘বুড়িগঙ্গা নদী পুনরুদ্ধার’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। আমরা বিভিন্ন সরকারের আমলে এই রকম আশা বাণী শুনতে পাই কাজ হোক আর না হোক! সাধারণ জনগণ হিসেবে এই আশার ‘বাণী’ আমাদের ভরসা। জানি না, আবার কখনো এই মৃতপ্রায় নদী বুড়িগঙ্গা দখল, দূষণের জালমুক্ত হয়ে আবার প্রাণ সঞ্চারিত হবে কি না!
The black night of March 25, 1971 when the Pakistani occupation forces kicked off one of the worst genocides in history that led to a nine-month war for the independence of Bangladesh in 1971. Every year different socio-cultural and educational organizations chalk out elaborate programs to observe 25th March. In 2013 I was documents the present situation after its 42 years of Independence.
আমাদের সুমন তার পরিবার নিয়ে গ্রামের বাড়ি হিজুলীয়াতে বেড়াতে গিয়েছে— সেখানেও বৃষ্টি হচ্ছে । সে অবশ্য তার ফেসবুকে লিখেছে— বৃষ্টি হচ্ছে খুব, সাথে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে—ঘনঘন ! গ্রামের বাড়ীর এই পরিবেশ তার খুব ভালো লাগছে !
বৃষ্টি আমার খুব প্রিয় । আর গ্রামের পরিবেশে সেই বৃষ্টি—অসাধারন ! ছোট বেলায় আমার, বর্ষা আর বৃষ্টি নিয়ে অনেক অনেক স্মৃতি রয়েছে—আহা! সেই সব বৃষ্টি ভেজা দিনগুলো !
২.ছোট মেঘ— তার দাদির জন্ম দিনে, খুব সুন্দর একটা উপহার দিয়েছে—তার দাদিকে । সে তার হাতে আঁকা একটা ছবি দিয়েছে । নিজে একটা ছোট খাম তৈরি করে, তাতে একটা চকলেট আর ছবি সেই খামে ভরে, দাদিকে বলে, দাদি তোমার জন্মদিনে—আমার গিফট ! আমি মেঘ’কে বললাম, তুমি ‘শুভ জন্মদিন দাদি’ লিখেছ বাংলায়, আর তোমার নাম কেন ইংরেজীতে লিখেছ ? মেঘ তার উত্তরে বলে—বাবা, আমি আমার নামের বানান এখন না দেখে ইংরেজীতে লিখতে পারি, তাই আমি আমার নামের বানান ইংরেজীতে লিখেছি।
এই মুহূর্তে আহমেদ শরীফ স্যারের একটা কথা মনে পরে গেল—সুখ কেউ কাউকে দিতে পারে না, সুখ পেতে জানতে হয় । সুখ বাইরে নেই, সুখ চিত্তলোকে সৃষ্টি করতে হয় . . .
The Bishwajit Ijtema meaning Global Congregation is an annual gathering of Muslims in Tongi, by the banks of the River Turag, in the outskirts of Dhaka, Bangladesh. It is the second largest Islamic congregation after the Hajj. Ijtema is an Arabic word which means public gathering. In Bengali, the event is known as the “Bishwa Ijtema”. Bishwa is a Bengali word which means world. Every year thousands of Muslims gathered and join the Ijtema is a prayer meeting spread over three days, during which attending devotees perform daily prayers while listening to scholars reciting and explaining verses from the Quran. It is attended by devotees from 150 countries.Speakers include Islamic scholars from various countries.
In this year devotees from home and abroad were seen streaming towards the gathering site on the 1st phases 15-17 January 2017. According to organizers, around three million people have taken part in the final prayers,During the Final Prayer,huge crowds stretch from the Ijtema ground in Tongi into the Dhaka metropolitan area. Schools and offices are declared closed on the occasion.
The Bengali Tabhlighi Jamaat movement started in Dhaka, East Bengal during the 1950s. The first Ijtemas were organized in Chittagong 1954 and Narayangonj 1958 followed by Ijtemas at the Ramna Race Course in Dhaka in 1960, 1962 and 1965 Due to the increasing rate of participants, the government of East Pakistan allowed organizers to schedule the event annually by the River Turag in Tongi 1967. As the number of participants increased, The government of Bangladesh allotted 160 acres of land was acquired and developed as a permanent Ijtema ground in Tongi.
১. রাত থেকেই শিশির পড়ছে— টিনের চালের উপর শিশির পড়ার সেই শব্দটা খুব ভালো লাগছে । মাঝে মাঝে বাদুরের ডানা ঝাপটানোর শব্দটা—অনেকটা ভয় জাগানিয়া ! অনেক দিন পর আবার ফিরে এলাম আমাদের—হিজুলিয়া গ্রামে। আমার ফুপাতো ভাই, মুকুলের সাথে দেখা হলো, সে চেয়ারম্যান নিবর্াচন করবে । তাই নিয়ে বেশ ব্যস্ত দিন কাটছে তার। গ্রামের অন্যান্য স্বজনদের সাথে দেখা হলো—কথা হলো ।
ভোর রাতে আড়ত থেকে মাছ নিয়ে আসার পরিকল্পনা বাতিল করলাম। আমাদের গ্রামের বাড়ীটি দেখা-শোনার দায়িত্ব পালন করেন—খলিল ভাই, তাকে আড়ত থেকে মাছ আনার দায়িত্ব দিলাম । এখানে অনেক অনেক মাছ পাওয়া যায়—বোয়াল, শৈল, কৈ আর ছোট মাছ এ গুলো এখানকার ডাঙ্গার, তাজা মাছ । মুকুলকে বলে দিলাম— ভোরে এক হাড়ি খেজুরের রস পাঠিয়ে দিতে । অনেক দিন খেজুরের রস খাওয়া হয় না—সেই সাথে খাওয়া হয় না, খেজুরের রস দিয়ে তৈরি —পায়েস আর নানা পিঠা-পুলি ।
ভোরের কুয়াশায় অনেক অনেক দিন হাঁটি না— একা একা এই খানে । ঝরা পাতা,সরিষা ফুল আর নাম না জানা গাছের পাতার উপর শিশির বিন্দু—দেখা হয় না কতো দিন ! গ্রাম-বাংলার এই প্রকৃতির মধ্য লুকিয়ে আছে সেই সব রুপ-রহস্যে ! যা আমার কাছে অমতর্ —নিত্য দিনের । অথচ তা কতোদিন —দেখা হয়ে উঠে না আমার; এই যাপিত জীবনে ! এই বিপন্নতার দায় মেটাতে— বার বার ফিরে ফিরে আসি এই খানে— এই জীবনের কাছে। এই নির্জন ভূগোলে ! যেখানে আমার অতীত বারবার কথা কয়ে উঠে !
সরিষা ক্ষেতের আল ধরে—কবরস্থানের পাশ দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে অনেক দূর চলে যাওয়া যায় । নির্জন এই প্রান্তটি আমার কাছে সব সময়—এক বিস্ময় ! আজ ২৫, বছর হলো— বাবা, এখানে চির নিন্দ্রায় ঘুমিয়ে, আছেন দাদা-দাদী, বড় ফুপু আর কত শত স্বজনেরা —তারা এখানে দিয়েছেন দীঘর্ ঘুম। মাঝে মাঝে আমার কাছে মনে হয়—হয়তোবা তাদের স্বানিধ্য পাবার আশায় বার বার ঘুরে-ফিরে; ফিরে আসি এই খানে— যেখানে সরিষা ফুলের হিম গন্ধ পাই—আমার নি:শ্বাসে ।
যতো দূর চোখ যায়; শুধু হলুদ সরিষার আঁকাবাঁকা রেখা । ঘন কুয়াশার মাঝে দেখতে পাই —ভোরের লাল সূযর্ উকি দিচ্ছে এই নির্জনে— নি:শব্দে পথ হাটতে থাকি, ধুসর কুয়াশায় হঠাৎ একটা কুকুরের দেখা পাই— আঁকাবাঁকা শুকিয়ে যাওয়া খালটির নালায় তার পিপাসা মেটায় । কবরস্থান পেছনে ফেলে হাঁটতে হাঁটতে দেখা হয়ে যায়— হিজল গাছটির ডালে বসে আছে—ভোরের দোয়েল ! নাম না জানা সেই হলুদ পাখি ! জলাধার পেড়িয়ে আরো একটু এগিয়ে যাই—ভোরের কুয়াশায় মরা গাছের ডাল গুলোতে বসে আছে— এক ঝাঁক ধবল বক—মাছের লোভে ! বসে আছে—অঁক পাখি ! দেখা মেলে ভোরের মানুষের !
ক্ষেতের আঁকাবাঁকা পথ ছেড়ে উঠে পরি সড়কটিতে —দেখি; একদল হাঁস, গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যায় ঐ পুকুরটির দিকে । বাঁশের সাঁকো পেড়িয়ে, বাড়ীর মুখে যেতেই — লাল ঝুটিওয়ালা মোরগটি ডেকে উঠে । ডেকে উঠে গৃহস্থের সেই কুকুরটি। মনে পরে যায়— আমাদের ছোট মেঘ এতোক্ষণে তার নতুন সঙ্গী— মুরগী, বিড়াল আর কুকুর ছানাদের সাথে ছুটোছুটি শুরু করে দিয়েছে । বাড়ী ফিরে দেখি—গাছি, এক হাড়ি রস রেখে গেছেন, সকালে মুড়ি আর খেজুরের রস আমার খুব পি্রয় খাবার । পরিবার সদস্যদের নিয়ে সকালের নাস্তা শেষ করে, আমাদের পূবর্ চকের দিকে যাবার ইচ্ছা রাখি— সেই ভ্রমনের কথা না হয় অন্য আরেক দিন বলা যাবে ।
আজকের এই লেখাটি—অনন্য কবি জীবনানন্দ দাশের একটি চরণ দিয়ে শেষ করতে চাই,
“যে জীবন ফড়িংয়ের, যে জীবন দোয়েলের, মানুষের সাথে তার হয় নাকো দেখা”!