ছোট ছোট কথা . . .

তাঁতী বাজার মোড়, পুরান ঢাকা।ছবি: মনিরুল আলম

বাসা থেকে বের হয়ে নড়াইল এক্সপ্রেস ক্রস করলাম—যাব শ্যামা প্রসাদ লেন হয়ে লক্ষীবাজারের মোড়ে; সেখান থেকে রিক্সা নিয়ে তাঁতীবাজার— ছোট একটা কাজে। হ্যাঁ, নড়াইল এক্সপ্রেস হচ্ছে, আমাদের এলাকার একটি হেয়ার ড্রেসারের দোকান। অনেক ঘটা করে সেলুনটির উদ্বোধন করা হয়েছিল, বর্তমানে এটি বন্ধ—একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে । দোকানের সাটারে তালা লাগানো, শুধু বিশাল আকারের সাইন বোর্ডটি ঝুলছে— নড়াইল এক্সপ্রেস হেয়ার ড্রেসার, ৪/২ পাতলা খান লেন, লক্ষীবাজার, ঢাকা-১১০০ ।

রিক্সা দিয়ে যেতে যেতে লক্ষ করলাম, আজাদ সিনেমা হলের সামনে লম্বা করে একখানা সিনেমার ব্যানার ঝুলছে, বেশির ভাগ সিনেমার ব্যানার গুলো হরিজ্যন্টাল হলেও এটি ভ্যারটিক্যাল— ফ্রেমের অর্ধেকটা অংশ ফাঁকা পরে আছে, দেখতে বে-খাপ্পা লাগছে ! হলটির দেয়ালের অন্য পাশে সাটানো রয়েছে সেই সিনেমাটির অনেক গুলো পোষ্টার— সিনেমাটির নাম ‘আই ডোন্ট কেয়ার’। নামটি ভেরি ইন্টারেষ্টিং মনে হলো !

সিনেমার রঙিন পোষ্টার থেকে চোখ সরিয়ে বাস্তব জগতে ফিরে এলাম—একটা চেচামেচির আওয়াজে ! একটা বাসকে ঘিরে কিছু একটা ঘটছে ! একজন রিক্সাওয়ালা দাঁত কেলিয়ে একটু পর পর চিৎকার করছে ! অন্য একজন রিক্সা চালক তাকে থামাতে বলে উঠলো, আবে হালায় দাঁত কেল্লাইয়া চিল্লাইবার লাগছোচ কেল্লা, চুপ থাক বে !

পথচারিরা তখন দর্শক হয়ে দাড়িয়ে গেছেন, কেউ কেউ বেশ উত্তেজিত দর্শক ! রাস্তার দুই পাশে সবকিছু ততোক্ষনে থেমে গেছে । আমি আশেপাশে তাকালাম কেই আবার ফেসবুক লাইভ শুরু করলো কিনা ! কিংবা কোন টিভি চ্যানেল ! আজকাল আবার সব কিছু লাইভ দেখা যায়— ডিজিটাল মিডিয়ার কল্যাণে । না আমার ধারণা ভুল প্রমাণ হলো । কেউ লাইভ করছে না ।

ধোলাইটা কে কারে দিল, দূর থেকে বোঝা গেল না —শুধু দেখলাম ঘটনাটির দিকে একজন ট্রাফিক পুলিশ দৌড়ে গেলেন তার পিছনে একজন সাজেন্ট হেলেদুলে ! একটু পরে আবার সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে গেল । সদরঘাট এবং রায়সাহেব বাজার মুখী যানচলাচল শুরু হল।

আজাদ সিনেমা হলের বাইরের সিনেমা তখন শেষ ! আমি লক্ষ করলাম কেউ কেউ হলের ভিতরে সিনেমা দেখতে

টিকেট কাটছেন— হয়তো লাইভ সিনেমায় কিছু দৃশ্য বাকি ছিল সেটা পুষিয়ে নিতে . . .

জনসন রোড, পুরান ঢাকা

১০ মার্চ, ২০১৯