আজ আমাদের ছোট মা ঢেউ এর জন্মদিন | শুভ জন্মদিন—প্রিয় ‘ঢেউ’ | শৈশবের সময়টাইতো দুরন্তপনার । তোর দুরন্তপনায় আমার সায় আছে । মা— তুমি এগিয়ে যাও, তোমার সাথে সবসময় তোমার বাবা-মা আছেন । তোমার দীর্ঘ জীবন হোক—আল্লাহর কাছে এই প্রার্থনা . . .
মেঘ এবং ঢেউ । ঢাকা, জানুয়ারি ২০২০ ছবি: মনিরুল আলম
এই রিকশা আস্তে চালান, আমিতো পরে যাই—আমিতো সিটে বসেছি ! কথা গুলো বলে ঢেউ আমার দিকে তাকিয়ে ! রিকশাওয়ালা পিছন ফিরে একটা হাসি দিয়ে বলে, ঠি ক আছে মা—আমি আস্তে চালাই। তুমি শক্ত করে বাবাকে ধরে, বসে থাকো . . .
মেঘের— স্কুল ছুটি শেষে, মাঝে মাঝে আমি তাকে নিয়ে আসি । তখন আমার সঙ্গী হয়—ঢেউ । রিকশাতে উঠে সে আমার কোলে বসবে না; রিকশার পাশের সিটে তার বসা লাগবে ! রিকশাতে বসে সব কিছু দেখতে হবে। অত:পর প্রশ্ন — এটা কি, সেটা কি ? এবং উত্তরটাও যথাযথো হওয়া লাগবে ।
আজ মেঘ, ঢেউ এবং আমি স্কুল থেকে বাসায় ফিরছি, রিকশাতে । ফেরার সময় ঢেউ’কে যথারীতি আমার কোলে বসিয়েছি। রিকশা চলতে শুরু করেছে, ঢেউ আমাকে বলছে— বাবা, আমার বসার জায়গা কই ? আমি বলি তাইতো, আমার আম্মীর বসার জায়গা কই ? তারপর বলি—আম্মী তুমি, ভাই আর আমার মাঝখানে বসো— তার বসার জায়গা ছোট হওয়ায় একটু মন খারাপ হয়েছে ! সে ভাইয়ের হাত ধরে রেখেছে, তার বাবার প্রতি অভিমান হয়েছে !
অন্যদিকে, ভাইয়ের প্রতি—তার প্রগাঢ় ভালোবাসা । তার ভাইকে এতোটুকু বকাঝকা করা যাবে না। বকাঝকা করলেই— সে তীব্র এক প্রতিবাদী মানুষ ! শিশুদের মনটা বুঝি এমনই হয় ; তাদের পৃথিবীতে বকাঝকার কোন স্থান নেই । আমরা বড় মানুষেরা এটা মাঝে মাঝে ভুলে যাই ।
কইন্যা আমার— তুই একজন সৎ, সুন্দর এবং সুখী মনের মানুষ হয়ে বেড়ে উঠিস—আল্লাহ নিশ্চই তোকে এবং তোর ভাইকে সহায় এবং রক্ষা করবেন। তার কাছে সব সময় আমার এই প্রার্থনা।
কোরআন শরিফ হাতে মেঘ, আগষ্ট ২০১৯ পুরান ঢাকা, লক্ষীবাজার। ছবি : মনিরুল আলম
মেঘ—সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে হাত-মুখ ধুয়ে রেডি হয়ে বসে আছে হুজুরের জন্য। আজ সে— নীল একটা পাঞ্জাবি আর সাদা পায়জামা পড়েছে । পাঞ্জাবির সাথে মিলিয়ে নীল রঙের একটা টুপি। আজ তার প্রথম কোরআন শরিফ পাঠ শুরু । এতোদিন সে কায়দা, আমপারা পড়ে শেষ করেছে ।
তার মা বললো, মেঘ— আয় তোকে ঠি ক মতো ওজু শিখিয়ে দিই— ঠি ক করে ওজু করে নে। কোরআন শরিফ সব সময় পাক-পবিত্র হয়ে পড়তে হয় । দাদীকে সালাম করে এসো। নতুন কোরআন শরিফ পড়া শুরু করলে মুরুব্বীদের দোয়া নিতে হয় ।
মেঘ আমাকে এসে বলে; বাবা ঘুম থেকে তাড়াতাড়ি উঠো ! আমি ঘুম জড়ানো কন্ঠে বললাম, কেন কি হয়েছে ? সে বলে আম্মী বলেছে—তোমাকে পাঁচ কেজি রসোগোল্লা কিনে আনতে। আজ বাসার সবাইকে রসোগোল্লা খাওয়ানো হবে। আমি তাকে বললাম, তুমি যাওতো এখন; দেখি আমি বিকেলে নিয়ে আসবো ।
বাপ-বেটা মিলে গতকাল বাংলাবাজার গিয়েছিলাম কোরআন শরীফ কিনতে । লিয়াকত এভিনিউ মার্কেটের জাহানারা বুক হাউস থেকে নাদিয়াতুল কুরান প্রকাশনীর একটা নাদিয়া সহীহ কোরআন শরিফ কেনা হলো। আজ থেকে তার কোরআন পাঠ শুরু হলো ।
সকলে মেঘের জন্য দোয়া করবেন। সে যেন ভালো ভাবে তার কোরআন পাঠ শেষ করতে পারে . . .
মানুষের জীবন সব সময় সহজ-সরল পথে চলে না । সহজাত এই জীবনে মানুষকে কখনো কখনো বন্ধুর পথ পাড়ি দিতে হয়। সৃষ্টিকর্তা যখন তার রহমতের দুয়ার খুলে দিয়ে ঢেউ’কে আমাদের পরিবারে পাঠালেন; সেই সময়টি নানা উদ্বেগ, উৎকন্ঠার মধ্যে দিয়ে পার করেছিলাম আমরা।
মেঘ-ঢেউ এর মা তখন হঠাৎ করেই চিকুনগুনিয়া জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিল—পরিস্থিতিটি আর স্বাভাবিক ছিল না। দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে; তাকে হাসপাতালে স্থানান্তর করেছিলাম । আল্লাহর প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস ছিল—ছিল মানুষের সহোযোগিতা আর ভালোবাসা । অবশেষে মা-মেয়ে দুজনে বিপদমুক্ত হয়েছিল ।
মানুষটিকে যখন আমি প্রথম দেখলাম; তখন সে ঘুমাচ্ছে ! আমার বুকটা তখন অদ্ভুত এক মায়ায় ভরে উঠেছিল ! তার মা জানালো—বাবুটি তার দিকে এক চোখে পিটপিট করে তাকাচ্ছিল তখন ! তার সেই দূরন্তপনা এখনো সময়ের সাথে এগিয়ে চলছে; সারাদিনের সঙ্গী হলো তার ভাইটি—মেঘ ।
আজ ছোট সেই মানুষটির জন্মদিন; দুই বছর হলো তার। শুভ জন্মদিন—কইন্যা । আমাদের ছোট মা ‘ঢেউ’ এর জন্য অনেক অনেক ভালোবাসা . . .
সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে ছুটতে হলো । একটা অ্যাসাইনমেন্ট আছে।মেঘটা তখনো ঘুমায় । তার কপালে ছোট একটা আদর দিয়ে আমি ছুটলাম কাজে । আমাদের মেঘের বয়স আজ দশ বছর হলো ।
সারাদিন কাজ শেষ করে বিকেলে যেন একটু অবসর পাওয়া গেল । সবাই মিলে ছাদে উঠলাম । আকাশ জুড়ে তখন সাদা-কালো মেঘের ছুটোছুটি পাশাপাশি ঝিরিঝির বৃষ্টি শুরু হয়েছে ! মেঘ বলে উঠলো, বাবা বৃষ্টিতে খুব ভিজতে ইচ্ছে করছে !
বালক ছেলেটাকে কোলে তুলে নিয়ে বুকে জড়িয়ে ধরলাম । বাব-বেটার এই কান্ড দেখে ছোট ‘ঢেউ’ বলে উঠল, বাবা ক-য়ে উঠবো ! আর মেঘ বলে উঠলো—বাবা দেখ রঙধনু ! আমি দেখলাম পূর্বাকাশে অসাধারন এক রঙধনু ফুটে উঠেছে ! মেঘ’কে বললাম, মেঘ-বৃষ্টির দল মনে হয় যুক্তি করে রঙধনু’কে ডেকে এনেছে, আজ তো তোর জন্মদিন তাই !
শুভ জন্মদিন ছোট বালক ‘মেঘ’ । তোর জন্য অনেক অনেক ভালোবাসা . . .
সকালে ঘুম থেকে উঠে বারান্দাতে দাড়িয়েছি— আকাশ ভরা শুধুই সাদা মেঘ—কোথাও নীলের দেখা পেলাম না । বাতাস চলাচল যেন একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে ।আবহাওয়া আজও গোমড়া মুখ করে বসে আছে । দিনের বেশীর ভাগ সময়টা মনে হয় অস্বস্তিকর গরমের মধ্যে দিয়েই কাটাতে হবে !
আমাদের পাশের বাসার টিনের চালে অযত্নে বেড়ে উঠা নয়ন তারা ফুল গুলোর দিকে তাকালাম— ঝাঁকে ঝাঁকে তারা ফুটে আছে ।অথচ ঠায় দাড়িয়ে ! একদম নড়াচড়া যেন ভুলে গেছে—গাছ আর ফুল গুলো !
আমার ছোট মা ‘ঢেউ’ আমার পাশে এসে দাড়িয়েছে—সেও আকাশ দেখবে ! বলছে উঠবো; তাকে কোলে তুলে নিতেই সে বলে উঠলো বাবা, হ্যা পি বা র্থ ডে ! আমি বললাম—হ্যাপি বার্থ ডে টু—বুবলী খাতুন ! সেও বলে উঠলো— হ্যাপি বার্থ ডে টু বুবলী খাতুন ! ঢেউ আজকাল তার ‘মা’ কে বুবলী খাতুন ডাকা শুরু করেছে !
ছোট ‘মেঘ’ তার মা’কে সকালে উঠেই শুভেচ্ছা জানিয়েছে । তারপরও আমরা তিনজন মিলে তাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানালাম । আমি ঢেউ আর মেঘ’কে বললাম—আজ কিন্তু আমার পছন্দের আরো একজন মানুষের জন্মদিন তার নাম আর্নেস্তো চে গুয়েভারা । মেঘ কিছুটা বুঝলেও ঢেউ কি বুঝলো— কে জানে; শুধু বললো আ নে চে— নিচে যাবো, ফুপির কাছে যাবো ।
শুভ জন্মদিন মেঘ-ঢেউ এর ‘মা’ । তোমার জন্য অনেক অনেক ভালোবাসা । শুভ জন্মদিন প্রিয় মানুষ—চে . . .
১. সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে নাস্তা শেষ করে চা এবং পত্রিকা নিয়ে বসেছি—আজ শুক্রবার আমাদের পারিবারিক একটি দাওয়াত আছে— সন্ধ্যায় । আমরা যাবো সেখানে—‘মা’ যাবেন না শারীরিক ভাবে ‘মা’ খানিকটা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন ।
চা খেতে খেতে খোঁজ খবর করছিলাম ডেইলি নিউজ ইভেন্টে আজ উল্লেখযোগ্য কি কি আছে ? জানা গেল ‘হ্যাসট্যাগ মি টু’ নিয়ে বাংলাদেশের নারী সাংবাদিকদের একটা মানববন্ধন আছে—জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে, বেলা আড়াইটায় । পশ্চিমা বিশ্ব থেকে শুরু হওয়া এই ‘হ্যাসট্যাগ মি টু’ আন্দোলন এখন বাংলাদেশে । নারী এবং শিশুদের উপর যৌন নিপিড়নকারীর মুখোশ খুলে দেওয়ার জন্য মূলত এই আন্দোলন ।বাংলাদেশে এটাই হচ্ছে প্রথম ‘হ্যাসট্যাগ মি টু’ সংহতি মানববন্ধন ।
২. শুভ জন্মদিন ছোট দুই মানুষ—অর্ণব এবং আদ্রিতা ! ওরা আমার কাজিন / cousin ( সুমন ) সুমন-শিমুর জমজ দুটি ছেলে-মেয়ে, থাকে ঢাকার রায়ের বাগে । আমরা ওদের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হলাম । মেঘ, ঢেউ, নীল, অর্ণব, আদ্রিতা এরা হলো আমাদের পরিবারের ছোট গ্যাং । ওরা সবাই এক সঙ্গে হয়ে সেকি আনন্দ ! অনেক মজা হলো—অনেক দিনপর পারিবারিক আড্ডা হলো ! আমার কাজিনদের তিন ভাই-বোনের মধ্যে সুমি এখন বাংলাদেশে নেই, পরিবার নিয়ে সে এখন মধ্যপ্র্যাচে থাকে, সুমন এবং শুভ দেশে আছে দুজনেই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে জব করছে, বিয়ে করে সংসারি হয়েছে— ওরা । আমাদের এই আড্ডায় সুমিকে মিস করলাম !
২১শ শতাব্দীর এই পৃথিবীতে মানুষের বসবাস এবং জীবনধারণের চিত্র অনেকটাই পাল্টে গেছে— আজ ! সময়ের বিবর্তনে একান্নবর্তী পরিবার গুলো ভেঙ্গে তৈরি হয়েছে, একক পরিবার— কনসেপ্ট ! আমরা ছুটছি; প্রতিদিন—প্রতিনিয়ত ! আজ অনিবার্য হয়ে পড়ছে আমাদের এই ছুটে চলা । হয়তোবা পরিবারের সবাইকে আর একসঙ্গে পাওয়া সম্ভব নয় তবু প্রত্যাশা থাকে আমরা হয়তো কোন একদিন মিলিত হবে সেই সব ছোট ছোট ভালোবাসা নিয়ে . . .
Today’s 16 December , 2016 my dear younger brother SHUVO is now married person.We pray both of you Shuvo & Arpeeta and thank you so much for your beautiful moments sharing with us.
You know the together you are stronger, together you are one.Our wishes with pray, love & happiness.Have a wonderful married life! Megh,Bubli & your Choto Bhaiya.