I love to ride motorbikes specifically on the high way ! I have been riding in this motorbike since 2010. Which I was received from my former daily newspaper office of Prothom Alo. It has still giving a good service with good a condition ! though precondition for regular maintenance of services. I have so many stories with my motorbikes . Yesterday, I am with my motorbike and my camera gears at the Buriganga 2nd bridge at Keraniganj part in Dhaka during my news coverage. Love the life you live. Live the life you love . . .
মনে মনে বৃষ্টির আশংকা করছিলাম, সেই চিন্তা থেকে ক্যামেরা ব্যাগের মধ্যে ছাতা, রেইনকোট নিয়ে নিলাম সঙ্গে এক বোতল পানি । যাবো ধামরাই উপজেলায়, EPA-EFE এর জন্য একটা ষ্টোরি করতে হবে, সঙ্গী আমার প্রতিদিনের বাহন মটরসাইকেল । ঢাকা থেকে সড়ক পথে এই উপজেলাটির দূরত্ব প্রায় ৪২ কিলোমিটার, এখানে আগেও আসা হয়েছে।
বর্ষা মৌসুম শুরু না হলেও বেশ কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে । গ্রীষ্মকাল শেষ হতে চলছে, আর ২/৩ দিন পরই শুরু হবে আষাঢ় মাস অর্থাৎ—বর্ষাকাল । খাল-বিল তখন ভরে উঠবে বর্ষার পানিতে, শুরু হবে নৌকা চলাচল, অবিরাম বৃষ্টি পরা শব্দের সাথে শোনা যাবে, ডোবায় ব্যাঙের ডাকাডাকি !
মনের আশংকা সত্য হলো । ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভার, নবীনগর এলাকাতে পৌঁছানোর পর শুরু হলো, আকাশ থেকে মেঘের হাকডাক আর বিদ্যুৎ চমকানো । একটু পরেই আকাশ কালো করে শুরু হলো ঝুম— বৃষ্টি ! অগত্যা সড়কের পাশে মটরসাইকেল রেখে—ছাতা, রেইনকোট নিয়ে দাড়িয়ে পড়লাম । আকাশ থেকে তখন ভারি বৃষ্টি পরছে, একটা অসাধারন বৃষ্টির ল্যান্ডস্কেপ চোখের সামনে দেখলাম । সেই সাথে বৃষ্টির শব্দ—এক কথায় অসাধারন লাগলো সেই মুহুর্ত ! মাঝে মাঝে বাতাসে বৃষ্টির ঝাপটা আমার ছাতাকে পাশকাটিয়ে ভিজিতে দিচ্ছিল আমাকে; এ এক অদ্ভুত অনুভুতি !
ঝড়ো বৃষ্টি-টি বেশিক্ষণ স্থায়ী হলো না, ১০/১২ মিনিট ছিল, বৃষ্টি একটু কমতেই শুরু হলো, আবার আমার মটরসাইকেল যাত্রা ! গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি কেটে কেটে একটা সময় চলে এলাম আমার নিদিষ্ট গন্তব্যে — ওয়েল কাম টু ধামরাই উপজেলা ।
ধামরাই উপজেলার উল্লেখযোগ্য দিকটি হলো এখানেই বাংলাদেশের সর্বাধিক প্রাচীন ও দেশের বৃহত্তম রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয় । হিন্দু সম্প্রদায়ের পূণ্যার্থীরা সারাদেশ থেকে এই রথযাত্রায় অংশগ্রহণ করতে দলে দলে এখানে আসেন, প্রতিবছর ।
ষ্টোরি-টি শেষ করতে প্রায় দেড়ঘন্টা সময় পার হলে গেল, ততোক্ষণে বৃষ্টি থেমে গেছে । এবার আমার ঢাকায় ফেরার পালা । ধামরাই বাজারে দেখতে পেলাম বিশাল— সেই জগন্নাথ রথটি । বাজার থেকে এক প্যাকেট পাউরুটি, কলা আর জাম কিনে নিলাম । মটরসাইকেল ড্রাইভ করতে করতে কোথাও থামিয়ে দুপুরের খাবারটা খেয়ে নিবো। শুরু হলো আবার সেই আড়াই ঘন্টার মটরসাইকেল যাত্রা— রিটার্ন টু ঢাকা ।
ভোরের আলো ফুটে উঠার আগেই প্রস্তুতিটা নিতে হয় ! রাত তিনটার সময় ঘর থেকে বের হন—তারা । তারপর ছোট ছোট ডিঙ্গী নৌকা নিয়ে বিলে চলে যায়—শাপলা তুলতে ! সারাদিন শাপলা তুলে নৌকা বোঝাই করে তা নিয়ে চলে আসেন ঘাটে, বিকেল নাগাদ । নদীর ঘাটে শুরু হয় দ্বিতীয় পর্ব; শাপলা গুলো আটিঁ বাঁধার কাজ। এই কাজটি পানির মধ্যে দাড়িয়ে থেকেই করতে হয় । সেদিন গিয়েছিলাম মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে, এই শাপলা তোলার ছবি এবং সেইসব মানুষ গুলোর সুখ-দুঃখের কথা জানার জন্য । যাদের জীবন-জীবিকা প্রকৃতির নিয়মেই ঋতুতে ঋতুতে পাল্টে যায়—এইখানে ।
কৃষক ইয়ার রহমানের সাথে কথা হয় ঘাটে বসে । বেলা তিনটা-চারটার দিকে আমরা সব শাপলা রেডি কইরা পিকআপে তুইলা দেই, তারপরে হেইডা চইলা যায় ঢাকার যাত্রাবাড়ী, হেনে দরদাম কইরা বিক্রি হয় —শাপলা। সারাদিন এক নৌকা শাপলা তুললে খরচপাতি বাদ দিয়ে তা ধরেন তিন/চার শত টাকা আমাগো থাহে ।
এখন শরৎ কালের শুরু—আকাশটা অদ্ভুত সুন্দর হয়ে আছে। সড়কটির দুইপাশে বিল; সেই বিলেই শত শত শাপলা ফুটে আছে । সড়কের পাশে সারিসারি গাছ, মাঝে মাঝে দুই একটা গাড়ী চলে যাচ্ছে, তাদের গন্তব্যের দিকে। জায়গাটা খুব ভালো লাগল !
ঘাটে বসে বসে ছবি তুলতে থাকি—ইয়ার রহমানের সুখ-দু্ঃখের কথা শুনি । অন্য আর একজন কৃষক গনি মিয়া শাপলার আটিঁ বাঁধতে বাঁধতে বলেন, সাংবাদিক ভাইরে তোমার দুঃখের কথাটা কও রহমান ভাই, রহমান মাথা নিচু করে কাজ করতে থাকেন । গনি মিয়াই বলতে শুরু করেন, চার মাইয়্যার এহনো বিয়া দিবার পারে নাই, মাইয়্যারা বড় হইয়া গেল ? বাপ-মায়ের বড় চিন্তা অভাবের সংসার কেমনে দিন চলবো । এই করনার সময়ে আমরা যে কেমনে চলতাছি, তা আল্লাই জানে।শাপলার দাম কইমা গেছে, বেচা-বিক্রি ভালো না—এবার । মানুষের হাতে টাকা নাই । জীবন বড় কষ্টে চলতাছে, আমাগো। সাংবাদিক ভাই আমাগো কথা একটু লেইখা দিয়েন ।
ততোক্ষণে ঘাটে আরো অনেক নৌকা এসে থেমেছে। সব নৌকাতেই শাপলা বোঝাই—আমাদের জাতীয় ফুল ‘শাপলা’ যা এই মানুষ গুলোর জীবিকানির্ব্বাহের একটা মাধ্যম হিসাবে কাজ করছে।
সড়কের ওপারে একটা উঁচু জায়গায় গিয়ে দাঁড়াই । যতোদূর চোখ যায় বিলটি দেখি । দূর থেকে একটা ডিঙ্গী নৌকা নিয়ে দুটি শিশু এই ঘাটের দিকেই আসছে শাপলা বোঝাই করে । বিকেলের রোদ ওদের চোখে-মুখে, ওরা হাসছে ! ওদের শাপলাও তুলে দেওয়া হবে পিকআপে । যা একটু পরেই ছুটবে ঢাকার উদ্দেশ্যে, আমারও গন্তব্যে ঢাকা . . .
বাবা—আমার ঘুম পাচ্ছে ! তখন রাত হয়ে গেছে, আমি মেঘ’কে নিয়ে মটরসাইকেল চালিয়ে বাসায় ফিরছি । আমি বললাম, বাবা—আমরা চলে এসেছি, আর একটু পরেই বাসায় ঢুকবো । মেঘ বলে—বাবা, জানো আমার কেন ঘুম পাচ্ছে ? আমি বললাম, না—সে বলে আমিতো আজ দুপুরে ঘুমাই নাই—তাই ঘুম পাচ্ছে !
আজ মেঘ আর আমি মটরসাইকেল নিয়ে বেড়িয়ে ছিলাম । সে বলে তোমার মটর সাইকেলে অনেকদিন আমি ঘুরতে বের হই না ! গিয়েছিলাম বেগম রোকেয়া এভিনিউ সড়কের বিসিএস কম্পিউটার সিটিতে । ক্যাননের মামুন ভাইয়ের সাথে একটা কাজ ছিল । মটর সাইকেলে যেতে যেতে বাপ-বেটা মিলে নানা কথা বলছিলাম ।
সাপ্তাহিক দিনটি বৃহস্পতিবার থাকায় সড়কে যানজটের অবস্থা ছিল যথারিত— ভয়াবহ ! কম্পিউটার সিটিতে কাজ শেষ করে বেড়িয়ে পড়লাম । আমাদের এখন গন্তব্য শিল্পকলা একাডেমী— প্রথম আলোর তরুণ আলোকচিত্রীদের শরনাগত—বাস্তচ্যুত রোহিঙ্গা শীর্ষক আলোচিত্র প্রদর্শনী দেখা । প্রদর্শনীতে গিয়ে দেখা হলো সুমন ইউসুফ, আশরাফুল আলম আর আবদুস সালামের সাথে । প্রদর্শনী নিয়ে কথা হলো ওদের সাথে ।
প্রদর্শনীটি কিউরেট করেছেন—ফটোসাংবাদিক আবীর আবদুল্লাহ । প্রদর্শনীর ছবি গুলো দেখে আমার কাছে মনে হয়েছে—দৈনিক সংবাদপত্রের জন্য এটা—এক ধরনের ডকুমেন্টেশন বা প্রামানিক দলিল । যদিও এই তরুণ ফটোসাংবাদিকদের কাছ থেকে আরও শক্তিশালী কাজ আশা করছিলাম ।
ফটোসাংবাদিকদের সব সময় একটা চাপের মধ্যে থেকে কাজ করতে হয় । সময় মতো ঘটনাস্থলে পৌছান, সঠিক অবস্থান নেওয়া, সঠিক ছবিটি তুলতে পারার পাশাপাশি তা সময় মতো অফিসে পাঠানো, পুরো প্রক্রিয়াটি একটা বড় মুন্সিয়ানার পরিচয় বহন করে— যা কাজ করতে করতে নিজের মধ্যে গড়ে উঠে ।
সময় উপযোগী প্রদর্শনীটির জন্য আয়োজক প্রথম আলো পত্রিকা, প্রদর্শনীর কিউরেট আবীর আবদুল্লাহ এবং সকল ফটোসাংবাদিকদের আমার পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাই . . .
যদিও টুরিষ্টদের জন্য বর্ষাকাল–সুন্দরবনে বেড়ানো জন্য উপযুক্ত সময় নয় । কারণ–কালবৈশাখী ঝড়, নিম্নচাপ, জলোচ্ছাস সহ নানা কারণে বনের পরিবেশ এবং জীবন হয়ে উঠে অন্যরকম ! বনে বেড়ানো তখন ঝুকিপূর্ণ হয়ে যায় ! তবে যারা বন’কে ভালোবাসে–প্রকৃতি প্রেমী; তাদের কথা আলাদা ! কবি গুরু– রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর বর্ষার রুপ দেখতে তার ছোট বোটে নিয়ে– উত্তাল পদ্মা ঘুরে বেড়িয়েছেন; দেখেছেন পদ্মা পারের সেই সব জীবন-গাঁথার গল্প . . .
সুন্দরবনের কটকা এলাকায় বন্যপ্রাণীর ছবি তুলতে একটা রেঞ্জে বসে অপেক্ষা করছি । ছবিটি তুলেছেন, আলোকচিত্রী ( ডকুমেন্ট্রি এবং ট্রাভেল ফটোগ্রাফার ) নুর আহমেদ জিলাল । সুন্দরবনের নানা জীববৈচিত্রের ছবি তুলতে এ বছরের আগষ্ট ২০১৭ মাসে সুন্দরবন গিয়েছিলাম । ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফী করতে গিয়ে নানা অভিজ্ঞতা হলো । আমাদের— দলটি বনের নানা জায়গায় ঘুরে বেড়িয়েছি—ছবি তোলা হলো, সুন্দরবন সম্পকে আরো জানা হলো দেখা হলো—নানা জীববৈচিত্রের ।
সপ্তাহ জুড়ে বেঙ্গল ট্যুরের জাহাজ এম ভি ডিঙি’তে ঘুরে বেড়ানোর অভিজ্ঞতাটা ছিল অসাধারন । আমাদের প্রতিদিন ভোর রাতে অর্থ্যাৎ ৪.৩০ / ৫.০০ মধ্যে ঘুম থেকে উঠতে হতো । জাহাজ থেকে নেমে ছোট বোটে করে সুন্দরবনের ছোট খাল গুলিতে বন্যপ্রাণী দেখতে এবং ছবি তুলতে বের হতাম । জোয়ার-ভাটা বিষয়টি মাথায় রাখতে হতো । বন বিশেষজ্ঞদের মতে—সুন্দরবনে বন্যপ্রাণী দেখার জন্য উত্তম সময় হচ্ছে বর্ষা কাল . . .
বিশ্ব বাবা দিবস—সকল বাবা কে অভিনন্দন জানাই । কর্মব্যস্ত বাবা— নিজের সন্তানের জন্য সময় বের করুন । নিজের ছেলে-মেয়ে’র সাথে সময় করে খেলাধুলা করুন, শুধু মাত্র সাংসারিক দায়িত্ব বোধ টুকুর মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে—আপনার সন্তান’কে আরো ভালোবাসা দিন, সময় দিন।
জাতিসংঘের শিশু তহবিলের ইউনিসেফ সাম্প্রতিক জরিপটি জানাচ্ছে—বিশ্বে অর্ধেকের বেশি শিশু তাদের বাবার সঙ্গে লেখাধুলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত থাকে ! ৭৪টি দেশে এই জরিপ চালানো হয় । বিশ্বের প্রায় ৮০টি দেশে এই বাবা দিবসটি পালন করা হয়ে থাকে এখন ।
আমার বাবা আজ বেঁচে নেই । তিন সন্তানের জনক এই মহান মানুষটিকে ছোট বেলায় অনেক ভয় পেতাম । ভয়ে কাছে যেতাম না ! কিন্তু এটা ছিল—আমার ভুল ! বোঝা-পরার সময়টা পার করতে না করতেই, বাব চলে গেলেন —না ফেরার দেশে ! জমে থাকা কথা গুলো, বাবাকে— আর বলা হলো না !
আমার বাবা হারিয়ে, আরো এক বাবা পেয়েছি আমি —ছোট বাবা; আমার সন্তান । সেই ছোট বাবা ‘মেঘ’ কে নিয়ে আমার সময় কাটে—আদর-ভালোবাসা, মান-অভিমান বাপ-বেটা মিলে উপভোগ করি । বাবা মানুষটি যে ভয়ের না, বাবা যে জীবনের অনেক বড় বন্ধু —সেটা মেঘ ইতি মধ্যে জেনে গেছে । সে বাপ-সন্তানের এই সম্পর্ক—মন থেকে অনুভব করে !
বিশ্ব বাবা দিবসে মা-বেটা মিলে আমার জন্য— খুব সুন্দর একটা গিফট তৈরি করেছে ! সেই গল্পটা না হয়, অন্য কোন দিন করা যাবে । পিতা-সন্তানের ভালোবাসা অটুট থাকুক— আজীবন ।
১. রাত থেকেই শিশির পড়ছে— টিনের চালের উপর শিশির পড়ার সেই শব্দটা খুব ভালো লাগছে । মাঝে মাঝে বাদুরের ডানা ঝাপটানোর শব্দটা—অনেকটা ভয় জাগানিয়া ! অনেক দিন পর আবার ফিরে এলাম আমাদের—হিজুলিয়া গ্রামে। আমার ফুপাতো ভাই, মুকুলের সাথে দেখা হলো, সে চেয়ারম্যান নিবর্াচন করবে । তাই নিয়ে বেশ ব্যস্ত দিন কাটছে তার। গ্রামের অন্যান্য স্বজনদের সাথে দেখা হলো—কথা হলো ।
ভোর রাতে আড়ত থেকে মাছ নিয়ে আসার পরিকল্পনা বাতিল করলাম। আমাদের গ্রামের বাড়ীটি দেখা-শোনার দায়িত্ব পালন করেন—খলিল ভাই, তাকে আড়ত থেকে মাছ আনার দায়িত্ব দিলাম । এখানে অনেক অনেক মাছ পাওয়া যায়—বোয়াল, শৈল, কৈ আর ছোট মাছ এ গুলো এখানকার ডাঙ্গার, তাজা মাছ । মুকুলকে বলে দিলাম— ভোরে এক হাড়ি খেজুরের রস পাঠিয়ে দিতে । অনেক দিন খেজুরের রস খাওয়া হয় না—সেই সাথে খাওয়া হয় না, খেজুরের রস দিয়ে তৈরি —পায়েস আর নানা পিঠা-পুলি ।
ভোরের কুয়াশায় অনেক অনেক দিন হাঁটি না— একা একা এই খানে । ঝরা পাতা,সরিষা ফুল আর নাম না জানা গাছের পাতার উপর শিশির বিন্দু—দেখা হয় না কতো দিন ! গ্রাম-বাংলার এই প্রকৃতির মধ্য লুকিয়ে আছে সেই সব রুপ-রহস্যে ! যা আমার কাছে অমতর্ —নিত্য দিনের । অথচ তা কতোদিন —দেখা হয়ে উঠে না আমার; এই যাপিত জীবনে ! এই বিপন্নতার দায় মেটাতে— বার বার ফিরে ফিরে আসি এই খানে— এই জীবনের কাছে। এই নির্জন ভূগোলে ! যেখানে আমার অতীত বারবার কথা কয়ে উঠে !
সরিষা ক্ষেতের আল ধরে—কবরস্থানের পাশ দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে অনেক দূর চলে যাওয়া যায় । নির্জন এই প্রান্তটি আমার কাছে সব সময়—এক বিস্ময় ! আজ ২৫, বছর হলো— বাবা, এখানে চির নিন্দ্রায় ঘুমিয়ে, আছেন দাদা-দাদী, বড় ফুপু আর কত শত স্বজনেরা —তারা এখানে দিয়েছেন দীঘর্ ঘুম। মাঝে মাঝে আমার কাছে মনে হয়—হয়তোবা তাদের স্বানিধ্য পাবার আশায় বার বার ঘুরে-ফিরে; ফিরে আসি এই খানে— যেখানে সরিষা ফুলের হিম গন্ধ পাই—আমার নি:শ্বাসে ।
যতো দূর চোখ যায়; শুধু হলুদ সরিষার আঁকাবাঁকা রেখা । ঘন কুয়াশার মাঝে দেখতে পাই —ভোরের লাল সূযর্ উকি দিচ্ছে এই নির্জনে— নি:শব্দে পথ হাটতে থাকি, ধুসর কুয়াশায় হঠাৎ একটা কুকুরের দেখা পাই— আঁকাবাঁকা শুকিয়ে যাওয়া খালটির নালায় তার পিপাসা মেটায় । কবরস্থান পেছনে ফেলে হাঁটতে হাঁটতে দেখা হয়ে যায়— হিজল গাছটির ডালে বসে আছে—ভোরের দোয়েল ! নাম না জানা সেই হলুদ পাখি ! জলাধার পেড়িয়ে আরো একটু এগিয়ে যাই—ভোরের কুয়াশায় মরা গাছের ডাল গুলোতে বসে আছে— এক ঝাঁক ধবল বক—মাছের লোভে ! বসে আছে—অঁক পাখি ! দেখা মেলে ভোরের মানুষের !
ক্ষেতের আঁকাবাঁকা পথ ছেড়ে উঠে পরি সড়কটিতে —দেখি; একদল হাঁস, গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যায় ঐ পুকুরটির দিকে । বাঁশের সাঁকো পেড়িয়ে, বাড়ীর মুখে যেতেই — লাল ঝুটিওয়ালা মোরগটি ডেকে উঠে । ডেকে উঠে গৃহস্থের সেই কুকুরটি। মনে পরে যায়— আমাদের ছোট মেঘ এতোক্ষণে তার নতুন সঙ্গী— মুরগী, বিড়াল আর কুকুর ছানাদের সাথে ছুটোছুটি শুরু করে দিয়েছে । বাড়ী ফিরে দেখি—গাছি, এক হাড়ি রস রেখে গেছেন, সকালে মুড়ি আর খেজুরের রস আমার খুব পি্রয় খাবার । পরিবার সদস্যদের নিয়ে সকালের নাস্তা শেষ করে, আমাদের পূবর্ চকের দিকে যাবার ইচ্ছা রাখি— সেই ভ্রমনের কথা না হয় অন্য আরেক দিন বলা যাবে ।
আজকের এই লেখাটি—অনন্য কবি জীবনানন্দ দাশের একটি চরণ দিয়ে শেষ করতে চাই,
“যে জীবন ফড়িংয়ের, যে জীবন দোয়েলের, মানুষের সাথে তার হয় নাকো দেখা”!